সময়ের পরিক্রমায় ব্যক্তিগত এসএমএস থেকে শুরু করে বিভিন্ন অ্যাপের সাহায্যে মুহূর্তের মধ্যেই বার্তা আদান-প্রদান করা যাচ্ছে। এসবের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে চিঠি লেখার আগ্রহ কিংবা চাহিদা। বার্তা পাঠানোর জন্য ফেসবুক মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রামসহ নানা প্ল্যাটফর্ম অহরহ ব্যবহার হওয়ায় বার্তার গুরুত্ব অতটুকু থাকে না। যখন কেউ এসএমএস করে তখন একটু বিশেষত্ব থাকে যে অনলাইনের যুগে কেউ অফলাইনে কোনো বার্তা লিখল। অনলাইন বার্তায় অনুভূতির গভীরতা যেন খুঁজে পাই না তাৎক্ষণিক প্রত্যুত্তর পেয়ে।
প্রযুক্তি জীবন সহজ করতে গিয়ে কেড়ে নিয়েছে শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের স্পৃহা। একটি গবেষণা জানিয়েছে, কি-বোর্ডে লেখার চেয়ে কলমে বা পেন্সিলে লিখলে তা মনে দাগ কেটে গেঁথে বসে বেশি। কম্পিউটারে লেখার সময়ে ভুল সংশোধন, তা মুছে পরিষ্কার ভাবে লেখার সুবিধা থাকে। কিন্তু কাগজে কলমে লেখার সময়ে সংশোধনের সুযোগ কম এবং পরিশ্রমসাধ্য। শিল্পীসত্তা লালনের জন্য চিঠি লেখার অভ্যাস খুবই কার্যকর। যেখানে প্রেরকের স্পর্শ মিশে আছে তার চেয়ে অর্থবহ আর কি হতে পারে! নিভৃতে লেখা চিঠির প্রত্যেক অক্ষরে মিশে থাকে মানুষের মনের গোপনতম রহস্য, অপ্রকাশিত আবেগ, প্রতিভার স্ফূরণ, সময়ের ইতিহাস।
প্রযুক্তির যুগে যে একেবারে চিঠি লিখিনি এমন নয়। তবে অনেক বড় কোনো চিঠি কাউকে দেওয়ার অভিজ্ঞতা নেই। আমি চিরকুট লিখে অনেককেই দিয়েছি অনেকসময়। ছোট্ট কোনো উপহারের সঙ্গে কাগজে লিখে দেওয়ার ব্যাপারটাই অন্য রকম। আমি কাউকে কোনো উপহার দিলে তার সঙ্গে ছোট করে কোনো বার্তা জুড়ে দিই। বিশেষ করে বই বিনিময়ের সময় কোনো এক ফাঁকা পৃষ্ঠায় দু চার লাইনে লেখা অনুভূতি, কয়েকবছর পর আমার অনুপস্থিতিতেও হয়তো স্মৃতিচারণ করাবে।
বছর আগে একবার চিঠি পাঠিয়েছিলাম একজনকে। পেয়েছিল, কিন্তু বিলম্বে। হয়তো তার কাছে সেটির গুরুত্ব ছিল না। আমাকে আদিমযুগের মানুষ বলে আখ্যায়িত করেছিল। হা হা । আমি মনে করি কাগজে কলমে লেখা চিঠির অনুভূতির গভীরতা অন্য কোনো মাধ্যমে পূর্ণতা পাবে না। সবশেষে বলে যাইঃ-
Thanks for reading. Feel free to send comments, questions, or recommendations to mortuzaahmmed@aol.com.